সমাজে সাহিত্যের প্রভাব

সমাজের দর্শনে সাহিত্যের আবাধ বিচরন

                বিশেষ সংবাদদাতাঃ-  সাহিত্য একটি বৃহত্তম সমাজে বৃহত্তর দর্পণরূপে প্রতিভাত হয়। সমাজ জীবনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগ থাকে সাহিত্যিকের। সাহিত্যিকদের দাবি, আমরা সাহিত্যপাঠের মাধ্যমে সামাজিক রীতি-নীতি, ধর্ম-সংস্কার, পাল-পার্বণ, আচার-অনুষ্ঠানের সঙ্গে একাত্ম হতে পারি। সাহিত্য চিরকালের মানুষের সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘটিয়ে দেয়। সাহিত্য পাঠের শুধু ব্যক্তি জীবন নয়। সমাজবিজ্ঞান ও ইতিহাসের অনেক উপাদান সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়। বলাবাহুল্য, সমকালকে অবলম্বন করে চিরন্তন শাশ্বতের দিকে যাত্রা করেন সাহিত্যিকরা।

সাহিত্য
                প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সাহিত্য কল্পনা জগতের বিষয় হল বাস্তবের ভেতর সামাজিক পটভূমিকেই তার ভিত্তিমূল গড়ে ওঠে।সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, সাহিত্য একটি সমাজের চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করতে সাহায্য করে। সাহিত্য পাঠে বৃহতের আনন্দলোকে ব্যক্তিজীবনের চরম মুক্তি ঘটে। সাহিত্যের দর্পণে আত্মসমীক্ষা করতে পারে মানুষ। সংসার জীবনের ক্ষুদ্রতা সংকীর্ণতা গণ্ডি অতিক্রম করে বৃহত্তর সমাজে মানুষকে মুক্তি দেয় সাহিত্য। মানুষের স্নেহ, প্রেম, ভালোবাসা ও মানবতার আদর্শ বৃত্তিগুলি জাগ্রত করে সাহিত্য। বিশ্বজীবনবোধে মঙ্গল চেতনায় মানুষের চিত্তকে উদ্বোধিত করার দায়িত্ব পালন করে সাহিত্য। মানুষকে জগত ও জীবনে সত্য, শিব ও সুন্দরের সন্ধান এনে দেয়। সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন "সাহিত্য মানুষের ভেতরে সুকুমার বৃত্তিগুলি জাগিয়ে তোলার কাজটা করে।"
                
                বলাবাহুল্য, সাহিত্যকে জীবনভেদ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সাহিত্য আমাদের চেতনা জাগ্রত করে বৃহৎ মানব সমাজের সঙ্গে আত্মিক যোগ ঘটিয়ে দেয়। শোষণহীন এক সমাজ গঠনের অঙ্গীকার করে সাহিত্য। মানুষকে অপর মানসিক শান্তি ও জীবন যুদ্ধে জয় লাভ করার অসীম শক্তি প্রদান করে। জীবন সংগ্রামে পরাজিত ব্যর্থ মানুষকে সাহিত্য নবজাগরণের ঠিকানা এনে দেয়। একটা সমাজকে সংকট থেকে উত্তরণের পথে দেখায় সাহিত্য।সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে মানুষের সাহিত্যপাঠে আগ্রহ কমে যাচ্ছে। সমাজকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে হলে সাহিত্যের উপর নির্ভর করতে হবে।

Comments